নিজস্ব প্রতিবেদক: শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার সাথে জড়িত ছিল সেনাবাহিনীর কিছু কর্মকর্তা। সে সময় ঢাকা সেনানিবাসে লেফট্যানেন্ট কর্নেল হিসেবে কর্মরত ছিলেন আমিন আহমেদ চৌধুরী, যিনি পরে মেজর জেনারেল হয়েছিলেন।
২০১৩ সালে আমিন আহমেদ চৌধুরী মারা যান। কিন্তু মৃত্যুর তিন বছর আগে অর্থ্যাৎ ২০১০ সালে তিনি বিবিসি বাংলাকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে জানিয়েছেন, জেনারেল জিয়াকে বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর খবর জানানোর পর প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেছিলেন, সো হোয়াট? লেট ভাইস প্রেসিডেন্ট টেক ওভার। উই হ্যাভ নাথিং টু ডু উইথ পলিটিক্স।”
সাক্ষাতকারে আমিন আহমেদ জানান, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ভোর পাঁচটার দিকে হত্যাকা-ের সাথে জড়িত একজন সেনা কর্মকর্তা মেজর রশিদের নেতৃত্বে একদল সেনা তার বাড়ি ঘিরে ফেলে। তিনি তখনো জানতেন না যে শেখ মুজিবকে সপরিবারে হত্যা করা হয়েছে। এরপর মেজর রশিদের নেতৃত্বে সৈন্যরা আমিন আহমেদ চৌধুরী এবং তৎকালীন কর্নেল শাফায়াত জামিলকে নিয়ে যায় মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমানের বাড়িতে। জেনারেল জিয়া তখন সেনাবাহিনীর উপ-প্রধান।
জেনালের জিয়াউর রহমানের বাড়িতে ঢোকার সময় রেডিওর মাধ্যমে আমিন আহমেদ চৌধুরী জানতে পারেন যে রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করা হয়েছে।
“জেনারেল জিয়া একদিকে শেভ করছেন একদিকে শেভ করে নাই। স্লিপিং স্যুটে দৌড়ে আসলেন। শাফায়াতকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘শাফায়াত কী হয়েছে?’ শাফায়াত বললেন, ‘এপারেন্টলি দুই ব্যাটালিয়ন স্টেজ এ ক্যু। বাইরে কী হয়েছে এখনো আমরা কিছু জানি না। রেডিওতে এনাউন্সমেন্ট শুনতেছি প্রেসিডেন্ট মারা গেছেন।’ তখন জেনারেল জিয়া বললেন, সো হোয়াট? লেট ভাইস প্রেসিডেন্ট টেক ওভার। উই হ্যাভ নাথিং টু ডু উইথ পলিটিক্স।”
সেনানিবাসের দুটি ব্যাটালিয়ন এ অভ্যুত্থানের সাথে জড়িত থাকলেও পুরো সেনাবাহিনী সেটার পক্ষে ছিল না বলে উল্লেখ করেন আমিন আহমেদ চৌধুরী। ঢাকা সেনানিবাসে যখন এ অভ্যুত্থানের খবর ছড়িয়েছে তখন অনেক দেরি হয়ে গেছে।
এ অভ্যুত্থান পরিকল্পনার খবর কেন আগে জানা সম্ভব হয়নি এবং কেন সেনাবাহিনীর অন্য কোন ইউনিট এগিয়ে আসেনি সেটি আজও এক বিরাট প্রশ্ন।